উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনার মধ্যে সম্পর্ক

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র | NCTB BOOK

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অনেকদিন টেস্ট ক্রিকেট বিশ্ব র‍্যাংকিং-এ দশম স্থানে । কোনোভাবেই নবম অবস্থানে উঠে আসতে পারছে না। সামনে জিম্বাবুয়ে সফর। জিম্বাবুয়ে নবম অবস্থানে থাকলেও বাংলাদেশ থেকে তাদের পয়েন্ট পার্থক্য তেমন বেশি নয় । তাই বাংলাদেশ দল এবারের সফরের উদ্দেশ্য ঠিক করেছে যেভাবেই হোক জয় নিয়ে ফিরতে হবে । কোচ, খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাগণ সবাই সেভাবে ছক কাটছেন । তিন মাস আগে থেকেই খেলোয়াড়গণ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে কোচের অধীনে নিবিড় প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। জিম্বাবুয়ের মাঠ বিবেচনায় একজন স্পিন বোলিং এর কোচ নিয়োগ দেয়া হয়েছে । জিম্বাবুয়ের প্রতিটা খেলোয়াড়ের বিভিন্ন খেলার ভিডিও ফুটেজ ধরে ধরে তাদের দূর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে । কোন খেলোয়াড়কে পরাস্ত করতে কোন বোলার উত্তম হবে ও কোন বোলারকে কিভাবে মোকাবেলা করা হবে তাও ঠিক করা হচ্ছে । দলের ফিল্ডিং-এর দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে তার উন্নয়নের প্রতিও নজর দেয়া হচ্ছে । এ সকল পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির কারণে সফর শেষে মূল্যায়ন হলো জিম্বাবুয়ে সফরে দল ভালো খেলেছে ও জয় নিশ্চিত হয়েছে। এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য ঠিক করে সেভাবে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিতে পারাকেই জয়লাভের কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাই উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা অঙ্গাঅঙ্গিভাবে
সম্পর্কযুক্ত।

উদ্দেশ্য হলো চূড়ান্ত ফল যাকে ঘিরে প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় । লক্ষ্য হলো পরিকল্পনার অভিপ্রেত ফল । অর্থাৎ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রতিষ্ঠানে ভবিষ্যতে কী করা হবে, কখন ও কিভাবে করা হবে, ইত্যাদি বিষয় নির্ধারণ বা পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। আর এরূপ লক্ষ্য ও পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠানের সাধারণ উদ্দেশ্যকে ঘিরে আবর্তিত হয়ে থাকে ।

উদ্দেশ্য নির্ধারণ সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অধীন। প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্য নির্ধারণের পর আবার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগ ও উপ-বিভাগের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হতে পারে। আবার সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বিভাগ ও উপ-বিভাগের পরিকল্পনা প্রণীত হয় । অর্থাৎ সকল পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্য অর্জন করা । অধ্যাপক নিউম্যান প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনার মধ্যকার সম্পর্ককে একটা সুন্দর উদাহরণের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন; যা হলো-একটা বিমান সংস্থা এর কার্যক্রম নির্ধারণ, যন্ত্রপাতি নির্বাচন, কর্মী সংগ্রহ এবং কোনো কিছু যথাযথভাবে শুরুর পূর্বে অবশ্যই স্থির করবে যে, তাদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হবে যাত্রী বহন না মালামাল বহন করা । উদ্দেশ্য ঠিক হলেই তখন উদ্দেশ্যার্জনের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়।
উপরোক্ত আলোচনা হতে প্রতীয়মান হয় যে, সুস্পষ্টভাবে উদ্দেশ্য নির্ধারণ ছাড়া কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন সম্ভব নয় । পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় তাই উদ্দেশ্য নির্ধারণকে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অনেকেই উপস্থাপনের প্রয়াস পেয়েছেন । উদ্দেশ্য নির্ধারণ ও কৌশলগত দীর্ঘ বা মধ্য মেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়নের মধ্যকার সম্পর্ককে নিম্নে রেখাচিত্রের সাহায্য তুলে ধরা হলো :

চিত্র : উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনার মধ্যে সম্পর্ক
Content added By
Promotion